বিশ্বাস অবিশ্বাসের দড়ি টানাটানিতে কর্তৃপক্ষ বিশ্বাসীদের বিজয়ী করবেন বলে ঘোষনা করেছেন

এই জা্তীয় আলোচনা গুলোয় মেধার যে টানাটানি তার জুলুমে হৃদয়ের গভীর অন্তঃস্থলে পিঞ্জরাবদ্ধ সত্যান্বেষী মনের অনুক্ত আকুতিগুলো যদি সাপ্রেসড না হতো তাহলে সমস্ত নভোঃ আর ভূমন্ডলের মালিকের পরিচয় পেতে আমাদের এতো বেগও পেতে হত না আর হত না ইসলাম নিয়ে এত বিতর্ক।

প্রত্যেকের কষ্টার্জিত জ্ঞানেরই কোন না কোন একটা বেস থাকে।

এই বেস বা ভিত্তিগুলোর কোনটা এবসল্যুট আর কোনটা রিলেটিভ।

ক্রিয়েটর মহান আল্লাহ ব্যতিত আর সবকিছুর অস্তিত্বই বাস্তবিক ভাবে রিলেটিভ।যে কোন সময়ই এদের যে কোন পরিবর্তন সম্ভব।

এজন্য ক্বুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা বারবার তাঁর পরিচয় লাভের জন্য চিন্তা করার দাওয়াত দিয়েছেন, জবরদস্তি করেন নি; কারন চিন্তার জগতে জবরদস্তি চলেনা।

এজন্য সর্বাগ্রে যেটা প্রয়োজন তা হলো আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ,রিযকদাতা, নিয়ণ্ত্রনকর্তা.......ইত্যাদি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য গুলোর যে দাবি করেছেন সে বিষয়ে ক্লিয়ার ধারণা থাকা।মানার বিষয়টা তো পরে আসে।
আর এই মেনে চলাকেই ইসলাম (আত্মসমর্পণ) বলে।

আর এসমস্ত বিষয় বুঝতে গেলে বিতর্ক হওয়া স্বাভাবিক।তবে সে ক্ষেত্রে সত্যবাদিতার সাথে সরলমনে চিন্তাকে স্বাগতম জানানো হয়েছে।

কারন মানুষের বিবেক নিংড়ানো চিন্তাগুলো সরল হয় এবং সত্যাশ্রয়ী হয়।সুস্থ্য সরল বিবেকবান মনের সত্যাশ্রয়ী চিন্তা আর কর্মের এই ধারাকে ইসলাম স্বভাব বা ন্যাচার বা ফিতরাত বলে উল্লেখ করে থাকে।

আর ইসলামের অপর নাম স্বভাবজাত দ্বীন বা ফিতরাতি জীবনব্যবস্থা(Natural Lifestyle) ।

আর ইসলামের আরও একটা অনণ্য বৈশিষ্ট্য হলো ইসলামিক নলেজের বেস বা ভিত্তি কিন্তু সবসময়ই এবসল্যুট যার ভিত্তিতে ক্ষনস্থায়ী দুনিয়া ও চিরস্থায়ী আখিরাতের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা হয়েছে যা অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত ও জন্ম-জীবন-মৃত্যু প্রভৃতি বিষয়ের সমাধানে সবচেয়ে কার্যকর ও গ্রহনযোগ্য মতামত প্রদান করে।

আর এটা স্বীকার করতেই হবে যে বস্তু ও বস্তুর গুণ কোনটাই এবস্যলুট না , সবই আপেক্ষিক।একারনেই বস্তুবাদের ধারণা আপেক্ষিকতার সীমায় আবদ্ধ।আর ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোন বস্তুর অস্তিত্বের ব্যাপারে বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন অমূলক , বিশ্বাস অবিশ্বাসের কথা আসবে এবসল্যুট কোন কিছুর ব্যাপারে। এজন্যই ইসলাম সহ প্রত্যেকটা ধর্মেই বিশ্বাস জিনিষটা সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ যা এবসল্যুটিজমের ভিত্তি (এটা ইউরোপিয়ান এবসল্যুটিজম না ;এখানে শব্দটি আপেক্ষিকতার সরল বিপরীতার্থক শব্দ হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে যার অর্থ any theory holding that values, principles, etc., are absolute and not relative, dependent, or changeable. ) যা বস্তুবাদীদের নিকট মূল্যহীন,যদিও তারা (বস্তুবাদীগণ) এক্ষেত্রে ভুলেরই স্বীকার বলতে হবে।কাজেই ইসলাম সহ প্রতিটি ধর্মমতই তাদের নিকট অগ্রহনযোগ্য হয়ে পড়ে।

মুসলিমরা ঠেকে গিয়েছে এজন্য যে আল্লাহ তাআলা এই মানা না মানার সাথে সফলতা ব্যর্থতা-জান্নাত জাহান্নামের ওয়াদা করেছেন, এতে করে মুসলিমদের স্বাভাবিক হামদর্দির গুন বা দায়িত্ব ,যাই বলা হোক না কেন, এটা যে তারা নিজেরা মানার সাথে সাথে অন্যদেরকেও মানানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

সার্বক্ষণিক ভাবে এই প্রচেষ্টা দাওয়াত নামে পরিচিত, আর যদি এই স্বাভাবিক প্রচেষ্টা বাঁধাগ্রস্ত হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেক্ষেত্রে ইসলাম বৃহত্তর স্বার্থে বেশ কিছু শর্তসাপেক্ষে নিয়মতান্ত্রিক মোকাবেলার (উত্তম বিতর্ক, জিহাদ) অনুমতি প্রদান করে যা প্রত্যেক আইনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে পড়ে (অর্থাত খারাপের মূলোতপাটনে প্রয়োজনে নিয়মতান্ত্রিক বলপ্রয়োগ)।
এই ব্যবস্থাপত্র (জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ) অনেকেরই শিরঃপীড়ার কারন হয় যা হওয়াই স্বাভাবিক, যেমন দুর্ণীতি বিরোধী আইন দুর্ণীতিবাজদের নিকট কখনই পছন্দ হয় না যদিও তা ভাল ও প্রয়োজনীয়।

এই জিহাদের শর্ত ও নিয়ম তাই যা রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খুলাফায়ে রাশেদীন অনুসরণ করেছেন।পরবর্তিতে ন্যায় পরায়ণ মুসলিম শাসকগণ ও সেই পথেই হেঁটেছেন, আর কারও কারও দ্বারা হয়েছে কিছু পদস্খলন বা অতিরঞ্জন যা সর্বদাই সত্যান্বেষী মুসলিমগণের দ্বারা নিন্দিত হয়েছে।তবে বলাবাহুল্য যে বিরোধী শিবিরে ন্যায় অন্যায় উভয় পন্থাই নিন্দিত হয়েছে যা সাধারণতঃ হয়ে থাকে।

অনেকেই ইসলামের এই নীতি (জিহাদ) টির এইজন্য বিরোধিতা করে থাকেন যে ইসলাম তো শান্তির ধর্ম, তাহলে এতে মারামারি কে উতসাহিত করা হয় কেন ?

এখানে একটা জরুরী জ্ঞাতব্য বিষয় হলো ইসলাম আর দশটা ট্রেডিশনাল ধর্মের মত কোন ধর্ম নয় বরং এটি এমন একটি পুর্ণাংগ জীবনবিধান বা সংবিধান যা মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য একটি স্বচ্ছ, স্বনির্ভর ও কল্যাণরাষ্ট্রের চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্যতা রাখে; আর এ বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে সুপ্রমানিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত।

কাজেই আমরা মনে করি মৃত্যুর আগের জীবন ও পরের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে শুধুই কথার পিঠে কথা বলার মানষিকতা বা নিজের জ্ঞানের বহর জাহির করার অসুস্থ প্রবনতাকে ঝেড়ে ফেলে আসুন আমরা সবাই সেই রব্ব কে চিনি ও মানি যিনি আমাদের সবাইকে বানিয়েছেন,যার কাছে ফিরে যেতেই হবে ;ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়।

আর ঠিক সেভাবেই মানি যেভাবে তাঁর পাঠানো সর্বশেষ রসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁহার সাহাবিগণ মেনেছেন।

ওয়াল্লাহুল হাদী ওয়া হুয়াল মুস্তাআন।

বি দ্র. শুধু মাত্র বিতর্কের খাতিরে সারা রাত ঘুম নষ্ট করে লেখাটি লেখা হয় নি।নিরাপদ ব্লগিং এর স্বপ্ন বাস্তবা্য়নের স্বার্থে এবং ঈমানের হেফাযতের স্বার্থে আমার মত এক অজ্ঞ মুর্খ (গভীর জ্ঞাণ ও প্রজ্ঞার অধিকারি
মানণীয় উলামায়ে কেরাম (ইন্টেলেকচুয়াল স্কলার্স) এর পরামর্শ সাপেক্ষে চলার চেষ্টারত) এক সামান্য মেডিকেল স্টুডেন্ট এর এই চেষ্টা তখনই স্বার্থক
হবে যখন জানবো যে পাঠক ভাই বোনেরা লেখাটি পড়ে একটু হলেও আল্লাহ তাআলাকে ভয় করেছেন যিনি সমস্ত আসমান জমিনের মালিক,যার প্রতি কারও এবাদত বা কুফুরী(অবিশ্বাস) কোনটাতেই তাঁর কিচ্ছু আসে যায় না !